শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কোটা আন্দোলন সহিংসতায় নিহতদের জন্য বিশষ দোয়ার আয়োজন করেন লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র   লক্ষ্মীপুরে শ্রমজীবী কর্মহীন মানুষের মাঝে যুবলীগ নেতার খাবার বিতরণ করেন লক্ষ্মীপুরে শ্রমজীবী কর্মহীন ও পথচারিদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন পৌর মেয়র দেশব্যাপী জামায়াত,বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ কোটা ব্যবস্থা সংস্কার লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করলেন পারুল এমপি বিনামূল্যে ৮ শতাধিক রোগীর চিকিৎসা সেবা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে-আবু হেনা মোরশেদ

গ্রামের ৩৫ টাকার ডাব শহরে বিক্রি হচ্ছে একশত পঞ্চাশ টাকায়!

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

বর্তমানে শহরে প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। দামের কারণে যে কেউ ইচ্ছে করলেই ডাব কিনতে পারছেন না। শহরের ক্রেতারা যে ডাব ১২০-১৫০ টাকায় কিনে খায়, বর্তমানে গ্রাামে উৎপাদনকারীরা ব্যবসায়ীদের নিকট সে ডাব বিক্রি করছে প্রতিটি ৩৫-৪৫ টাকায়। শহরে আসলেই মূল্য বেড়ে যায় প্রায় ৪ গুন। ডাবের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ শহরের আড়ৎদারদের অতিরিক্ত মুনাফা।
স্থানীয় উৎপাদনকারী, খুচরা বিক্রেতা, পাইকার এবং কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে ডাব নিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানায়, গ্রাম থেকে শহরের একজন ক্রেতার হাতে এক একটি ডাব পৌঁছতে এর মাঝে প্রায়টি ১২টি হাত বদল হয়। প্রতিটি হাতেই থাকে লাভের হিসাব। এর মাঝে ডাব প্রতি ২০-৩০ টাকা লাভ নেয় শহরের মধ্যসত্তা ভোগী কিংবা আড়ৎদার।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, দেশের মোট নারিকেল উৎপাদনের বড় অংশই উৎপাদন হয় উপকূলীয় লক্ষ্মীপুর জেলায়। ১৪৪০.৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের লক্ষ্মীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে নারিকেল গাছ। এতদিন নারিকেলের জন্য এ জেলার সুনাম থাকলেও এখন ডাবের জন্যও সারাদেশে সুপরিচিত লক্ষ্মীপুর।

নারিকেল চাষী ও সদর উপজেলার বাসিন্দা নুর আলম জানায়, কোমলপানীয় হিসেবে অতীতে সব সময়ই কম বেশি ডাবের চাহিদা ছিল। চাহিদার সাথে সাথে ডাবের দাম নারিকেলের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা এখন গাছ শুন্য করে ডাব বিক্রি করে ফেলছে। এতে নারিকেল উৎপাদন প্রায় শূন্য হয়ে গেছে। চাহিদা বৃদ্ধির সাথে দেশব্যাপী অস্বাভাকিভাবে বেড়ে গেছে ডাবের দাম।

কমলনগর উপজেলার তোরাব আলী মিয়ার খামার বাড়িতে রয়েছে ১৫শ নারিকেল গাছ। এ বাড়ি থেকে প্রতিটি গাছ দেড় থেকে দুই মাস পর ডাব বিক্রি করা হয়। প্রতিবারে ২-৩ হাজার ডাব বিক্রি করা হয়।

ডাব বিক্রির সময় কথা হয় খামারের মালিক নুরুল আমিন মিয়ার সাথে। তিনি জানান, গত কয়েক মাস আগে প্রতি হাজার ডাব আটাইশ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করেছেন স্থানীয় এক পাইকারের নিকট।
বর্তমানে তার বিক্রয় মূল্য ৩৫ হাজার টাকা। খামারের বয়স প্রায় শত বছর হলেও গত ২ বছর যাবত নারিকেলের পরিবর্তে ডাব বিক্রি করে দিচ্ছেন তিনি।

এসময় নুরুল আমিন মিয়া জানান, শহরে ১২০-১৫০ টাকায় ডাব কিনে খেলেও গত ২ বছরের মধ্যে কখনো ২৮-৩৫ টাকার বেশি মূল্যে ডাব বিক্রি করতে পারেননি তিনি।

রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ফরিদ আহদে জানান, নারিকেলের তুলনায় ডাবে বেশি টাকা পাওয়া যায় বিধায় বাগানের মালিকরা এখন সারা বছরই ডাব বিক্রি করে দিচ্ছেন। বছরে ৬-৭ বার ডাব বিক্রি করা যায়। কিন্তু নারিকেল বিক্রি করা যায় বছরে ২ বার। এখন ডাবে আয় বেশি।

নারিকেল ও ডাব ক্রেতা খোরশেদ আলম জানান, বর্তমানে প্রতিটি নারিকেল তারা বাগান থেকে কিনছেন ৩৫-৪০ টাকায় এবং প্রতি ডাব কিনছেন ৩৫-৪৫ টাকায় দরে।

তিনি আরও জানান, একটি ডাব বাগান থেকে শহরের ক্রেতাদের হাতে পৌঁছতে প্রায় ১২টি হাত বদল করতে হয়। প্রতিটি হাতে গুণে গুণে টাকা দিতে হয়। প্রথমত তারা বাগানের বা বাড়ির মালিকদের থেকে বর্তমানে প্রতিটি ডাব গড়ে কিনছেন ৩৫-৪৫ টাকায়। দ্বিতীয়ত গাছ থেকে প্রতিটি ডাব নামাতে স্থানীয় পাড়িয়াদের (তরুণ যারা গাছ থেকে ডাব কাটে) দিয়ে খরচ করতে হয় ৩-৪ টাকা। তৃতীয়ত যারা গাছের গোড়ায় রশি ধরে এবং ঝরা ডাব এক স্থানে জড়ো করে তাদেরকে দিতে হয় ডাব প্রতি ৪০-৫০ পয়সা। চতুর্থত স্থানীয় ভ্যানচালক বা ছোট ট্রাক ড্রাইভারকে দিয়ে স্থানীয় আড়তে জড়ো করতে খরচ ২টাকা। পঞ্চমত ট্রাক যোগে ঢাকার আড়তে পৌঁছাতে খরচ ৪-৫ টাকা। ৬ষ্ঠ বার আড়তে লেবারদেরকে দিতে হয় ৪০-৫০ পয়সা। আড়তে
পর্যন্ত পৌঁছতে একজন স্থানীয় ব্যবসায়ীর প্রতিটি ডাবে খরচ হয় ১০-১৪ টাকা। ৭ম লোক হিসেবে স্থানীয় একজন বিক্রেতা যখন ঢাকার বাজারে যখন ডাব নিয়ে
পৌঁছান, তখন বাগানে কেনা ৩৫-৪৫ টাকা মূল্যর ডাবটির মূল্য দাঁড়ায় কমপক্ষে ৫০-৫৫ টাকা। এরপর নিজের খরচ, বিনিয়োগ এবং শারীরিক পশ্রিম মিলে জেলার একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী ৪-৫ টাকা লাভে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা আড়ৎদারদের নিকট ডাব বিক্রি করেন গড়ে ৬০ টাকায়। ৮ম হাত হিসেবে বড় শহরের আড়ৎদারদের নিকট ডাব পৌঁছে। এরপরে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকায়।

রায়পুর উপজেলার হায়দারগঞ্জ বাজারের নারিকেল ব্যবসায়ী আবদুর রহিম জানায়, বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক গাছ শুন্য করে ব্যাপক হারে ডাব বিক্রি করে ফেলছেন। তবে কৃষক লাভবান না হলেও মধ্যসত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর জানায়, জেলায় ২ হাজার ৭শ ৩৫ হেক্টর জমিতে নারিকেল বাগান রয়েছে। এছাড়ার প্রতিটি বাড়িতেই নারিকেল গাছ রয়েছে।
বাগান ও বাড়ি থেকে বছরে প্রায় সাড়ে ৫ থেকে ৬ কোটি শুকনো নারিকেল আহরণ করা হয়। আর প্রতি মাসে গড়ে ডাব ব্রিক্রি হচ্ছে, প্রায় দেড় কোটি পিস।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন জানান, ডাব ও নারিকেল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চাষীদের বছরে আয় প্রায় সাড়ে তিনশ থেকে প্রায় চারশত কোটি টাকা আয় রয়েছে। তবে ডাব বিক্রি করে কৃষক লাভবান হলেও মধ্যসত্বরা অতিরিক্ত দাম আদায় করায় তা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০৪ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০৮ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৪৯ অপরাহ্ণ
  • ২০:১১ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ
কপিরাইট © ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
themesba-lates1749691102