নিজস্ব প্রতিবেদক : লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি, রামগতি সার্কেল) সাইফুল আলম চৌধুরী এবং রামগতি থানার ওসি আলমগীর হোসেনকে অবরুদ্ধ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরণি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পের গোল ঘরে গেলে তাদের অবরুদ্ধ করা হয়। স্থানী সুত্রে জানাযায় (রাত ৯টা ১০মিনিট) তারা অবরুদ্ধ রয়েছেন। সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করছেন স্থানীয় লোকজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নোয়াখালী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকালে এএসপি সাইফুল ও ওসি আলমগীর টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন। পরে তারা ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ক্যাম্পের গোল ঘরে বসেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই ঘরে আসেন স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মাইন উদ্দিন, ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য বাবুল হোসেন সুজন এবং টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের সেখান থেকে বের করে দিলে লোকজন উত্তেজিত হয়ে ক্যাম্প ঘেরাও করে। কিছু সময়ের মধ্যে স্থানীয় কয়েক হাজার লোক একত্র হয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন।
৩নং ওয়ার্ডেে সদস্য বাবুলের দাবি, ‘বিকালে টাংকির বাজার পুলিশ ক্যাম্পে আসেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের দেখে আমি ৪নং মেম্বার ওয়ার্ডের সালাহ উদ্দিন, ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাইন উদ্দিন ও সাখাওয়াত মাস্টার ক্যাম্পে যাই। আমাদের দেখে উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বের হয়ে যেতে বলেন এএসপি। একপর্যায়ে তিনি তেড়ে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ওই কক্ষ থেকে বের করে দেন।
‘তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ায় এসেছেন। এর আগেও একাধিকবার রামগতির পুলিশ ও লোকজন বিভিন্ন সময় আমাদের সীমানায় এসে মানুষকে মারধর করেছে। তখনও মানুষ প্রতিবাদ করেছেন।’
টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত দাবি করেন, ‘মেম্বাররাসহ আমি ক্যাম্পের গোল ঘরে গেলে সার্কেল এএসপি উত্তেজিত হয়ে সবাইকে বের হয়ে যেতে বলেন। আমরা দ্রুত ওই স্থান থেকে বের হয়ে আসি।’
রামগতি থানার ওসি আলমগীর হোসেনের দাবি, ‘সন্ধ্যায় নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আমাদের অধীনে থাকা টাংকির বাজার ক্যাম্পে আসি। সেখানে মিটিং চলাকালে স্থানীয় মেম্বাররা এলে পরে আসতে বলি। কিন্তু তারা বাইরে গিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে উত্তেজিত করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করেছে।’
এএসপি সাইফুল মেম্বারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় দাবি করে বলেন, ‘টাংকির বাজার ক্যাম্পের পাশে নোয়াখালী অঞ্চলের আরও একটি আরআরএফ (রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স) ক্যাম্প রয়েছে। আমরা ক্যাম্পের গোল ঘরে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সদের নিয়ে মিটিংয়ে বসার কিছুক্ষণ পর কিছু না বলে এক লোক এসে বসে পড়েন। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মাইন উদ্দিন মেম্বার বলে পরিচয় দেন। আমি তাকে এবং সঙ্গে থাকা লোকদের পরে আসতে বলি। কিন্তু তারা বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নিতে লোকজনকে উত্তেজিত করে তোলেন। এখানে রামগতি ও হাতিয়ার সীমানা বিরোধের যোগসূত্র থাকতে পারে। নোয়াখালী থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসছেন, তারা আসার পর বিষয়টি নিয়ে কথা হবে।’
এ বিষয়ে সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে নোয়াখালী জেলা পুলিশের একাধিক টিম নিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আসল ঘটনা জানার চেষ্টা করছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’