রামগতি প্রতিনিধি : লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলা চর কাদিরা ইউনিয়নের ইয়াসমিন বেগমের (২৭) স্বামী সৌরভ হোসেন দিনমজুর। এক ছেলে ও স্বামী নিয়ে একটি মাটির তৈরি টিনের ঘরে বসবাস করতেন। বন্যার পানিতে ঘরটির তিন দিকের টিনের দেয়াল ভেঙে পড়েছে। বন্যার সময় অন্যত্র আশ্রয় না নিয়ে বসবাস করছেন ভাঙ্গা ঘরে। বর্তমানে চারদিক ভাঙ্গা ঝরাঝীর্ন অবস্থায় রাতে ছেলে ও স্বামী নিয়ে বসবাস করছেন। ভয়ের মধ্যে রাত যাপন করেন। ঘরের যে মেরামত করবেন, সেই টাকা-পয়সা নেই। কিস্তিতে টাকা এনে সামান্য জমি চাষ করে তাঁদের সংসার চলত। তাই ঘর সংস্কারের জন্য সরকার এবং বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। ইয়াসমিন বেগমের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বেড়ির পাশে। তাঁর ঘরটি পুরো বিধ্বস্ত। ঘর মেরামতের সামর্থ্য নেই। স্বামী দিনমজুর। কৃষিকাজ করেন। খাওয়াদাওয়া নিয়েই চিন্তায় আছেন।
তাঁর এখন ঘর ঠিক করার মতো অবস্থা নেই। কিভাবে ঘরটি নির্মাণ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অন্যের বাড়িতে কত দিন থাকা যায়, তা বলে কেঁদে ফেলেন তিনি। একই গ্রামের আরেক ক্ষতিগ্রস্ত মনোয়ারা বেগম (৬০) স্বামী মোহসীন একজন কর্মক্ষম মাটির ঘরটি গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে পাঁচ দিন ধরে আশ্রয় নিয়েছেন। গত সপ্তাহের বন্যায় লক্ষ্মীপুরের কমলগরের বিশটি পরিবারের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও অনেকেই উঠতে পারবে না নিজ ঘরে। আবার অনেকে চারপাশ খোলা ঘরে রাতে ঘুমাতে হচ্ছে। এর মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র পরিবার। অনেকে আছেন স্বজনদের বাড়িতে। তাঁরা ঘর সংস্কার করে বসবাসের উপযোগী করে তোলার জন্য সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশা করছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত চর কাদিরার বিভিন্ন অঞ্চলে গেলে এমন দুর্দশার চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চর কাদিরা এলাকার চর ঠিকা চারটি ঘর পুরো বিধ্বস্ত ও তিনটি মাটির ঘর আংশিক ক্ষতি হয়।
এভাবে চর ঠিকা গ্রামের আরো পাঁচটি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়। অনেকের ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। মাটির দেয়ালধসে পড়েছে। অনেককে আবার ভাঙা ঘরে কোনোমতে পর্দা দিয়ে থাকতে হচ্ছে। চর কাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হারুন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠানো হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন পুরো উপজেলায় কতটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা তৈরী করা হবে। সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।