Dhaka , রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে ৭ দালাল আটক পূর্ব শত্রুতার জেরে সাংবাদিক ও নারীকে লাঞ্চিত করার দায়ে, মামলা লক্ষ্মীপুর চক বাজার মসজিদ মার্কেটে,পুলিশ-সাংবাদিক প্রবেশে লাগবে অনুমতি! লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের সম্মানে শিবিরের ইফতার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সংস্কার দুটিই খুব জরুরি-এ্যানী লক্ষ্মীপুরে যৌতুক মামলায় কৃষি কর্মকর্তা কারাগারে লক্ষ্মীপুরে আদালত কর্তৃক হেবাকৃত দলিল বাতিল হওয়ায় বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রতিবাদ লক্ষ্মীপুরে যুবদলের নবগঠিত কমিটির আনন্দ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন লক্ষ্মীপুর নন্দন অটিজম এন্ড এনডিডি স্কুলের  শিশুদের বার্ষিক ক্রীয়া ও পুরস্কার বিতরণ লক্ষ্মীপুরে ডিপ্লোমা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে সংবাদ সম্মেলন

কমলনগরে চেয়ারম্যানসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
  • ২৪২ Time View
রামগতি (লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন চাঁদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত ও দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ নির্দেশ দেন।

মামল সূত্র জানায়, খায়ের একসময় সাধারণ মাদরাসা শিক্ষক থাকলেও এখন চড়েন ৩৫ লাখ টাকার এসি গাড়িতে। তার নিজ নাম ও পরিবারের সদস্যদের নামে কমলনগর, রামগতিসহ ঢাকায় রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সাহেবেরহাট ইউনিয়নটির অধিকাংশ এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এতে সেখানে নির্বাচন দিচ্ছে না কমিশন। এজন্য একবার নির্বাচিত হয়েই প্রায় ১৪ বছর চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন আবুল খায়ের।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২৯ এপ্রিল জয়নুল আবেদিন নামে এক ব্যক্তি স্পেশাল জজ আদালত ও দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালে ইউপি চেয়ারম্যান খায়েরসহ ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদক চাঁদপুর সমন্বিত কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। ১২ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।বাদী জয়নুল আবেদিন কমলনগর উপজেলার চরজগবন্ধু গ্রামের মৃত মমিন উল্যার ছেলে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের একই এলাকার মৃত ইয়াসিন পাটওয়ারীর ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি। অপর অভিযুক্ত বেলাল হোসেন জুয়েল উপজেলার চরফলকন গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে।

মামলা সূত্র জানা যায়, অভিযুক্ত খায়ের মাতাব্বরনগর মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ২০১১ সালের ২৭ আগস্ট তিনি সাহেবেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি করে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর ইউনিয়নের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগের কথা ছিল। এতে জব কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবার থেকে ১ জন করে শ্রমিক নির্বাচিত হবে। প্রত্যেক শ্রমিক ৪০০ টাকা হারে মজুরী পাবে। কিন্তু খায়ের চেয়ারম্যান লোভ প্রভাবিত হয়ে সরকারি টাকা আত্মসাতে নিজেই জব কার্ডে টিপ সই দেয়। এছাড়া টাকাগুলো শ্রমিকদেরকে রকেট হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান ইজিপিপি নিয়ম ভেঙে ভেক্যু দিয়ে কাজ সম্পন্ন করে। পরে নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রকেট হিসাব খুলে সেই সিমগুলো নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। গত ১৮ মার্চসহ এর আগে বিভিন্ন সময় ৪০০ টাকা হারে ৪০৯ জন শ্রমিকের ৪০ দিনের কর্মসূচির ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

অনারেবল উইমেন বেনেফিট (ভিডিডব্লিউবি) কার্যক্রমের আওতায় ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮৫ জন উপকারভোগী নারী নির্বাচনসহ কার্ড ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি ছিল। এতে ৩০ কেজি করে ৮.৫৫৫ মেট্টিক টন চাল উত্তোলন করা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান লোভে প্রভাবিত হয়ে তার আত্মীয়-স্বজন, স্বচ্ছল ব্যক্তি নামে বেনামে কার্ড করে চাল ও টাকা আত্মসাৎ করেছে। চেয়ারম্যান একটি প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করেছেন ইউনিয়নের ৮০-৮৫ শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ইউনিয়নের প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। ভোটার সংখ্যাও অনেক হ্রাস পেয়েছে। এতে চেয়ারম্যান নিজেই কমলনগরের মানচিত্র থেকে ইউনিয়নটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কিন্তু উপজেলা সর্বোচ্চ জেলেদের ভিজিএফ ১৫৩০টি কার্ড,  ৫৮৫টি বিধবা ভাতা কার্ড, ৮৭৭টি বয়স্কভাতার কার্ড, ৩৪০টি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ও ২৮৫ জনের ভিজিডি কার্ডের বরাদ্দের টাকা ও চাল আত্মসাৎ করে আসছেন চেয়ারম্যান। কমলনগরের বিভিন্ন এলাকায় ১১ টি দলিলে চেয়াম্যান নিজ নামে ৫৪৬.০৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। জমিগুলোর মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। রামগতিতে স্ত্রী কহিনুর বেগমের নামে ২০ লাখ টাকায় ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন চেয়ারম্যান। সেখানে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের একটি ৫ তলা ভবন করে তারা বসবাস করছেন। ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ কমলনগর রেজিস্ট্রি অফিসের ৯৩৭ নং সাফ কবলা দলিল মূলে বাগান ও ভিটা শ্রেণির ১৩ শতাংশ জমি কেনে চেয়ারম্যান। যার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা। এছাড়াও ২১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৭ মার্চ ১৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় পৃথক স্থানে ৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করেছে চেয়ারম্যান।

চেয়ারম্যান ৩৫ লাখ টাকা মূল্যে নিজ নামে মাইক্রো প্রাইভেট এসি গাড়ি ক্রয় করেন। তার নিজ নামে ও পরিবারের লোকজনের নামে ঢাকায় আনুমানিক ৫ কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেছেন। মামলার ২নং আসামি বেলাল হোসেন জুয়েল বিভিন্নভাবে চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করে আসছেন বলে মামলার বাদী জানিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, জয়নুলের বাড়ি চরলরেন্স ইউনিয়নে। তিনি আমার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নয়। ব্ল্যাকমেইল করে তিনি আমার কাছ থেকে নাগরিক সনদ নেন। আমার এলাকায় কাজীর পোস্টটি খালি। সেখানে তিনি আবেদন করেন। কিন্তু আমি স্থানীয় একজনের পক্ষে সুপারিশ করি। এর মধ্যে জয়নুল কাগজপত্র ঠিক করে নিজের নামে আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত কাজী নিজাম উদ্দিন আদালতে মামলা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে রেখেছে। জয়নুল মনে করেছে ঘটনাটি আমি করেছি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে কোনো কিছু না পেয়ে মিথ্যা অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

Tag :
About Author Information

Sagor Ahmed

আলোচিত

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল থেকে ৭ দালাল আটক

কমলনগরে চেয়ারম্যানসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা

Update Time : ০৩:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
রামগতি (লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন চাঁদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত ও দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ নির্দেশ দেন।

মামল সূত্র জানায়, খায়ের একসময় সাধারণ মাদরাসা শিক্ষক থাকলেও এখন চড়েন ৩৫ লাখ টাকার এসি গাড়িতে। তার নিজ নাম ও পরিবারের সদস্যদের নামে কমলনগর, রামগতিসহ ঢাকায় রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সাহেবেরহাট ইউনিয়নটির অধিকাংশ এলাকা মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এতে সেখানে নির্বাচন দিচ্ছে না কমিশন। এজন্য একবার নির্বাচিত হয়েই প্রায় ১৪ বছর চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন আবুল খায়ের।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২৯ এপ্রিল জয়নুল আবেদিন নামে এক ব্যক্তি স্পেশাল জজ আদালত ও দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালে ইউপি চেয়ারম্যান খায়েরসহ ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদক চাঁদপুর সমন্বিত কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। ১২ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।বাদী জয়নুল আবেদিন কমলনগর উপজেলার চরজগবন্ধু গ্রামের মৃত মমিন উল্যার ছেলে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের একই এলাকার মৃত ইয়াসিন পাটওয়ারীর ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি। অপর অভিযুক্ত বেলাল হোসেন জুয়েল উপজেলার চরফলকন গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে।

মামলা সূত্র জানা যায়, অভিযুক্ত খায়ের মাতাব্বরনগর মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ২০১১ সালের ২৭ আগস্ট তিনি সাহেবেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি করে সরকারী টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর ইউনিয়নের ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগের কথা ছিল। এতে জব কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবার থেকে ১ জন করে শ্রমিক নির্বাচিত হবে। প্রত্যেক শ্রমিক ৪০০ টাকা হারে মজুরী পাবে। কিন্তু খায়ের চেয়ারম্যান লোভ প্রভাবিত হয়ে সরকারি টাকা আত্মসাতে নিজেই জব কার্ডে টিপ সই দেয়। এছাড়া টাকাগুলো শ্রমিকদেরকে রকেট হিসাবের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান ইজিপিপি নিয়ম ভেঙে ভেক্যু দিয়ে কাজ সম্পন্ন করে। পরে নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রকেট হিসাব খুলে সেই সিমগুলো নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। গত ১৮ মার্চসহ এর আগে বিভিন্ন সময় ৪০০ টাকা হারে ৪০৯ জন শ্রমিকের ৪০ দিনের কর্মসূচির ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

অনারেবল উইমেন বেনেফিট (ভিডিডব্লিউবি) কার্যক্রমের আওতায় ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮৫ জন উপকারভোগী নারী নির্বাচনসহ কার্ড ও খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি ছিল। এতে ৩০ কেজি করে ৮.৫৫৫ মেট্টিক টন চাল উত্তোলন করা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান লোভে প্রভাবিত হয়ে তার আত্মীয়-স্বজন, স্বচ্ছল ব্যক্তি নামে বেনামে কার্ড করে চাল ও টাকা আত্মসাৎ করেছে। চেয়ারম্যান একটি প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করেছেন ইউনিয়নের ৮০-৮৫ শতাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ইউনিয়নের প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। ভোটার সংখ্যাও অনেক হ্রাস পেয়েছে। এতে চেয়ারম্যান নিজেই কমলনগরের মানচিত্র থেকে ইউনিয়নটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কিন্তু উপজেলা সর্বোচ্চ জেলেদের ভিজিএফ ১৫৩০টি কার্ড,  ৫৮৫টি বিধবা ভাতা কার্ড, ৮৭৭টি বয়স্কভাতার কার্ড, ৩৪০টি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ও ২৮৫ জনের ভিজিডি কার্ডের বরাদ্দের টাকা ও চাল আত্মসাৎ করে আসছেন চেয়ারম্যান। কমলনগরের বিভিন্ন এলাকায় ১১ টি দলিলে চেয়াম্যান নিজ নামে ৫৪৬.০৩৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। জমিগুলোর মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। রামগতিতে স্ত্রী কহিনুর বেগমের নামে ২০ লাখ টাকায় ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন চেয়ারম্যান। সেখানে ৫০ লাখ টাকা মূল্যের একটি ৫ তলা ভবন করে তারা বসবাস করছেন। ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ কমলনগর রেজিস্ট্রি অফিসের ৯৩৭ নং সাফ কবলা দলিল মূলে বাগান ও ভিটা শ্রেণির ১৩ শতাংশ জমি কেনে চেয়ারম্যান। যার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা। এছাড়াও ২১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৭ মার্চ ১৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় পৃথক স্থানে ৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করেছে চেয়ারম্যান।

চেয়ারম্যান ৩৫ লাখ টাকা মূল্যে নিজ নামে মাইক্রো প্রাইভেট এসি গাড়ি ক্রয় করেন। তার নিজ নামে ও পরিবারের লোকজনের নামে ঢাকায় আনুমানিক ৫ কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেছেন। মামলার ২নং আসামি বেলাল হোসেন জুয়েল বিভিন্নভাবে চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করে আসছেন বলে মামলার বাদী জানিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, জয়নুলের বাড়ি চরলরেন্স ইউনিয়নে। তিনি আমার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা নয়। ব্ল্যাকমেইল করে তিনি আমার কাছ থেকে নাগরিক সনদ নেন। আমার এলাকায় কাজীর পোস্টটি খালি। সেখানে তিনি আবেদন করেন। কিন্তু আমি স্থানীয় একজনের পক্ষে সুপারিশ করি। এর মধ্যে জয়নুল কাগজপত্র ঠিক করে নিজের নামে আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত কাজী নিজাম উদ্দিন আদালতে মামলা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে রেখেছে। জয়নুল মনে করেছে ঘটনাটি আমি করেছি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে কোনো কিছু না পেয়ে মিথ্যা অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।