Dhaka , সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এবার ফ্রি চক্ষু সেবা নিয়ে আসলো স্মার্ট একাডেমি রামগঞ্জে পাঠ্য বইয়ে গণঅভ্যুত্থান নিয়ে’অন্তর্ভুক্ত করবে বিএনপি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ২১ দিন পর স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু লক্ষ্মীপুরে উদ্বোধন হলো বারাকাহ্ মাল্টিকেয়ার হসপিটাল লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে ২০টি দোকান, কোটি টাকার ক্ষতি লক্ষ্মীপুরে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মাঝে ঘর নির্মাণের সামগ্রী বিতরণ রায়পুরে ব্যবসায়ী ফেডারেশনের মতবিনিময় গ্রন্থাগার দিবসে পাবলিক লাইব্রেরি উদ্বোধন করলেন ইউ,এন,ও ইমরান খান এদেশের মানুষের হৃদয়ে শেখ হাসিনার নাম থাকবে না: এ্যানি চৌধুরী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ১৭ বছর পর লক্ষ্মীপুরে প্রকাশ্যে শিবিরের র‍্যালি 

লক্ষ্মীপুরে আসামিকে মারধরের অভিযোগ, সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৮১ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আটকের পর আবদুর রহিম রনি নামে এক আসামিকে পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল রায়পুর আদালতে রনির স্ত্রী রিনা আক্তার ৫ কর্মকর্তাসহ সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

সন্ধ্যায় আদালতের পেশকার নুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মামলা নথিভুক্ত হলেও কোনো আদেশ দেননি বিচারক।

অভিযুক্তরা হলেন- রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু হানিফ, নুরুল ইসলাম, মো. আবু হানিফ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সফিক মিয়া, সাখাওয়াত হোসেন, কনস্টেবল আতিক উল্যা ও ইউসুফ ঢালি।

বাদীর আইনজীবী আবদুল আহাদ শাকিল পাটওয়ারী বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে আবদুর রহিমকে রায়পুর বর্ডার বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়।

তখন তার কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেলেও থানা হাজতে রাখেনি।

কোনো একটি গোপন কক্ষে রেখে তাকে মারধর করে। পরে একইদিন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মারধরের মামলা ও হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ জব্দ করতে আমরা আদালতে আবেদন করেছি।
এজাহার সূত্র জানায়, ১৭ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বর্ডার বাজার রায়পুর-চাঁদপুর সড়ক থেকে অভিযুক্তরা রনিকে আটক করে। তখন তার সঙ্গে গরু বিক্রির ৯০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকা অভিযুক্তরা নিয়ে গেছে। পরে তাকে নিয়ে এসে মারধর করে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৮০৯/৩৮৭, তাং ১৭/১২/২০২৩) দিয়েছে। পরে সেখানে পানি খেতে চাইলে টিউবওয়েলের সঙ্গে তার মাথায় আঘাত করে।

আটকের খবর পেয়ে রনির স্ত্রী রায়পুর থানায় বারবার গেলেও স্বামীর সন্ধান পাননি। পরে তিনি সদর থানা, গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় ও জেলা কারাগারেও খোঁজ নিয়ে স্বামীর সন্ধান পাননি। ফের রায়পুর থানায় গেলে সেখানে রনির মোটরসাইকেল দেখতে পান তিনি। এতে স্বামীর সন্ধান চাইলে বিভিন্ন কথা শুনতে হয় তাকে। পরে তিনি এসআই হানিফকে কল দিয়ে স্বামীর সন্ধান চান। হানিফ তার স্বামীকে ছাড়তে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। এতো টাকা নেই জানালে রনিকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানায় পুলিশ কর্মকর্তা।

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ১৮ ডিসেম্বর ডাকাতির প্রস্তুতিকালে রনিসহ দুইজনকে একনলা বন্দুক, ২ রাউন্ড কার্তুজ, দেশীয় অস্ত্র, ১৮০ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র আইন ও মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

বাদী রিনা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর ব্যাপারে এসআই হানিফের সঙ্গে কথা বললে তিনি আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চেয়েছেন। তারা আমার স্বামীর কাছে থেকেও ৯০ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন। তবুও আমি আরও ২০ হাজার টাকা দেব বলে জানিয়েছি। একদিন আগে আটক করে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন রাতে আমার স্বামীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ বলেন, মামলার বিষয়টি আমি জানি না। ডাকাতির প্রস্তুতির সময়ে অভিযান চালিয়ে আমরা রনিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করি। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তারা মামলা করতেই পারেন। তবে অভিযোগ সত্য নয়। রনির নামে এর আগেও কয়েকটি মামলা রয়েছে।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, অস্ত্র ও মাদকসহ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানি। এর বেশি কিছু জানা নেই। আসামির স্ত্রী মামলা করেছে কি না তাও জানা নেই। এসআই হানিফ আসামির স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা চাওয়ার বিষয়ে কোনো কিছুই আমাকে জানাননি। তারা আমাদের কাছে কোনো অভিযোগও করেনি

Tag :
About Author Information

Sagor Ahmed

আলোচিত

এবার ফ্রি চক্ষু সেবা নিয়ে আসলো স্মার্ট একাডেমি রামগঞ্জে

লক্ষ্মীপুরে আসামিকে মারধরের অভিযোগ, সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : ১০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আটকের পর আবদুর রহিম রনি নামে এক আসামিকে পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি অঞ্চল রায়পুর আদালতে রনির স্ত্রী রিনা আক্তার ৫ কর্মকর্তাসহ সাত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

সন্ধ্যায় আদালতের পেশকার নুরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মামলা নথিভুক্ত হলেও কোনো আদেশ দেননি বিচারক।

অভিযুক্তরা হলেন- রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু হানিফ, নুরুল ইসলাম, মো. আবু হানিফ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সফিক মিয়া, সাখাওয়াত হোসেন, কনস্টেবল আতিক উল্যা ও ইউসুফ ঢালি।

বাদীর আইনজীবী আবদুল আহাদ শাকিল পাটওয়ারী বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে আবদুর রহিমকে রায়পুর বর্ডার বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়।

তখন তার কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র ও মাদক পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেলেও থানা হাজতে রাখেনি।

কোনো একটি গোপন কক্ষে রেখে তাকে মারধর করে। পরে একইদিন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়েছে। পুলিশ হেফাজতে মারধরের মামলা ও হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ জব্দ করতে আমরা আদালতে আবেদন করেছি।
এজাহার সূত্র জানায়, ১৭ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের বর্ডার বাজার রায়পুর-চাঁদপুর সড়ক থেকে অভিযুক্তরা রনিকে আটক করে। তখন তার সঙ্গে গরু বিক্রির ৯০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকা অভিযুক্তরা নিয়ে গেছে। পরে তাকে নিয়ে এসে মারধর করে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা (রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৮০৯/৩৮৭, তাং ১৭/১২/২০২৩) দিয়েছে। পরে সেখানে পানি খেতে চাইলে টিউবওয়েলের সঙ্গে তার মাথায় আঘাত করে।

আটকের খবর পেয়ে রনির স্ত্রী রায়পুর থানায় বারবার গেলেও স্বামীর সন্ধান পাননি। পরে তিনি সদর থানা, গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় ও জেলা কারাগারেও খোঁজ নিয়ে স্বামীর সন্ধান পাননি। ফের রায়পুর থানায় গেলে সেখানে রনির মোটরসাইকেল দেখতে পান তিনি। এতে স্বামীর সন্ধান চাইলে বিভিন্ন কথা শুনতে হয় তাকে। পরে তিনি এসআই হানিফকে কল দিয়ে স্বামীর সন্ধান চান। হানিফ তার স্বামীকে ছাড়তে ২ লাখ টাকা দাবি করেন। এতো টাকা নেই জানালে রনিকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানায় পুলিশ কর্মকর্তা।

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ১৮ ডিসেম্বর ডাকাতির প্রস্তুতিকালে রনিসহ দুইজনকে একনলা বন্দুক, ২ রাউন্ড কার্তুজ, দেশীয় অস্ত্র, ১৮০ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি, অস্ত্র আইন ও মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

বাদী রিনা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর ব্যাপারে এসআই হানিফের সঙ্গে কথা বললে তিনি আমার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চেয়েছেন। তারা আমার স্বামীর কাছে থেকেও ৯০ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন। তবুও আমি আরও ২০ হাজার টাকা দেব বলে জানিয়েছি। একদিন আগে আটক করে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন রাতে আমার স্বামীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

মামলায় প্রধান অভিযুক্ত রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হানিফ বলেন, মামলার বিষয়টি আমি জানি না। ডাকাতির প্রস্তুতির সময়ে অভিযান চালিয়ে আমরা রনিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করি। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তারা মামলা করতেই পারেন। তবে অভিযোগ সত্য নয়। রনির নামে এর আগেও কয়েকটি মামলা রয়েছে।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক মজুমদার বলেন, অস্ত্র ও মাদকসহ আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানি। এর বেশি কিছু জানা নেই। আসামির স্ত্রী মামলা করেছে কি না তাও জানা নেই। এসআই হানিফ আসামির স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা চাওয়ার বিষয়ে কোনো কিছুই আমাকে জানাননি। তারা আমাদের কাছে কোনো অভিযোগও করেনি