Dhaka , শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এদেশের মানুষের হৃদয়ে শেখ হাসিনার নাম থাকবে না: এ্যানি চৌধুরী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ১৭ বছর পর লক্ষ্মীপুরে প্রকাশ্যে শিবিরের র‍্যালি  শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা বিএনপির পক্ষেই সম্ভব..এ্যানি কমলনগর ইউএনও’র বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন, লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা :৪ সাংবাদিক আহত লক্ষ্মীপুর জামীরতলী দারুসুন্নাহ ইসলামিায়া আলিম মাদ্রাসার পুস্কার বিতরণ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতির লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার,সভাপতি আলী, সম্পাদক ফারুক লক্ষ্মীপুরে ব্যতিক্রমী আয়োজনে সুন্নাতে খাতনা গাজী কমপ্লেক্স ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সভাপতি আরিফ, সম্পাদক শিপন। কমলনগরে ইউনিয়ন কৃষক দলের কৃষক সমাবেশ

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
  • ১১২ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী মাসু বেগমকে (২৫) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে কামাল হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। একই মামলায় আরও তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন কামাল হোসেনের বোন নাজমা বেগম (৩৩), মা আয়েশা বেগম (৬৩) ও ভাই মো. বাবুল (৩৮)।

দন্ডপ্রাপ্ত কামাল হোসেন রামগতি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর সেকান্দর গ্রামের মৃত আবদুল মালেক মাঝির ছেলে। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক। মামলার এজাহার, বাদী ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের দিকে জেলার কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের মেয়ে মাসু বেগমকে বিয়ে করেন কামাল হোসেন। তাদের সংসারে দুই ছেলের জন্ম হয়। এরপর কামাল আরও দুটি বিয়ে করেন। এনিয়ে প্রথম স্ত্রী মাসুর সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়, এসব নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এর জেরে কামাল ও তার পরিবারের লোকজন মাসুকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও কোনো লাভ হয়নি। ২০২০ সালের ১২ আগস্ট বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে মাসুর গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদন আসে। পরে ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মাসুর মা বিবি ছায়েরা (৫৮) বাদী হয়ে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ এতে মাসু বেগমের স্বামী কামাল হোসেনকে প্রধান করে শাশুড়ী আয়েশা বেগম, ননদ নাজমা বেগম, ফাতেমা বেগম, ভাসুর মো. বাবুল ও জামাল এবং জামালের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের নাম উল্লেখ করে আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

হত্যা মামলাটি তদন্ত করেন রামগতি থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান তপাদার। তিনি ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এতে কামাল হোসেন, নাজমা বেগম, আয়েশা বেগম ও মো. বাবুলকে অভিযুক্ত করেন এবং মো. জামাল ও ফাতেমা বেগমকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন। জলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত কামালকে ৩০২ ধারায় এ সাজা দেন। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এদিকে রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী বিবি ছায়েরা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়েকে তার স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও ভাসুর মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। রায়ে শুধু একজনের কারাদন্ড হয়েছে, বাকিরা খালাস পেয়েছে। তাই আমি খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।

Tag :
About Author Information

Sagor Ahmed

এদেশের মানুষের হৃদয়ে শেখ হাসিনার নাম থাকবে না: এ্যানি চৌধুরী

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

Update Time : ০৬:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী মাসু বেগমকে (২৫) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে কামাল হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। একই মামলায় আরও তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন কামাল হোসেনের বোন নাজমা বেগম (৩৩), মা আয়েশা বেগম (৬৩) ও ভাই মো. বাবুল (৩৮)।

দন্ডপ্রাপ্ত কামাল হোসেন রামগতি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর সেকান্দর গ্রামের মৃত আবদুল মালেক মাঝির ছেলে। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক। মামলার এজাহার, বাদী ও আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের দিকে জেলার কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আবুল কালামের মেয়ে মাসু বেগমকে বিয়ে করেন কামাল হোসেন। তাদের সংসারে দুই ছেলের জন্ম হয়। এরপর কামাল আরও দুটি বিয়ে করেন। এনিয়ে প্রথম স্ত্রী মাসুর সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়, এসব নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকতো। এর জেরে কামাল ও তার পরিবারের লোকজন মাসুকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও কোনো লাভ হয়নি। ২০২০ সালের ১২ আগস্ট বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে মাসুর গলায় ফাঁস দেওয়া মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদন আসে। পরে ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মাসুর মা বিবি ছায়েরা (৫৮) বাদী হয়ে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ এতে মাসু বেগমের স্বামী কামাল হোসেনকে প্রধান করে শাশুড়ী আয়েশা বেগম, ননদ নাজমা বেগম, ফাতেমা বেগম, ভাসুর মো. বাবুল ও জামাল এবং জামালের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের নাম উল্লেখ করে আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

হত্যা মামলাটি তদন্ত করেন রামগতি থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান তপাদার। তিনি ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এতে কামাল হোসেন, নাজমা বেগম, আয়েশা বেগম ও মো. বাবুলকে অভিযুক্ত করেন এবং মো. জামাল ও ফাতেমা বেগমকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন। জলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত কামালকে ৩০২ ধারায় এ সাজা দেন। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এদিকে রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী বিবি ছায়েরা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়েকে তার স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও ভাসুর মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। রায়ে শুধু একজনের কারাদন্ড হয়েছে, বাকিরা খালাস পেয়েছে। তাই আমি খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।