নিজস্ব প্রতিনিধি: ঢাকা উত্তরের বাংলাদেশ জায়াতের সেক্রেটারি রেজাউল করিম বলেছেন, বশিকপুরে শিশু গুলীবিদ্ধের ঘটনা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে-
শিশুর গায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় গুলী করা জঘন্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধ; তাই এসব অপরাধীকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ বিকেল ৪ টায় গত ১ এপ্রিল স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা গুলীবিদ্ধ লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার বশিকপুর গ্রামের ৬ বছরের শিশু আমেনা বেগমকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেখার পর এক প্রেসব্রিফিং-এ এসব এসব কথা বলেন।
তিনি গুলীবিদ্ধ শিশু ও তার পরিবারের সাথে একান্তে কথা বলেন এবং ভিকটিমের শরীর ও স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। মহানগরী সেক্রেটারি কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের সাথেও কথা বলেন এবং আমিনা বেগমের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেন। তিনি আমিনা বেগমের পরিবারকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন। এস সময় মহানগরী সেক্রেটারির সাথে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের শাহবাগ পূর্ব থানা সেক্রেটারী ও সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ নুরুন্নবী রায়হান, বিডিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ন ম নুরনবী জনি, বংশাল উত্তর থানা সেক্রেটারি মোঃ ফজলে আজিম, বংশাল দক্ষিণ থানার বায়তুলমাল সম্পাদক মোঃ জামাল উদ্দিন, বঙ্গবাজার উত্তর ওয়ার্ড এর সভাপতি মাওলানা মোঃ মিজানুর রহমান, সদরঘাট ব্যবসায়ী সমিতি সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন, জামায়াত নেতা বেলাল হোসেন, আসম মাহবুব, মোঃ ইউসুফ, মোঃ সিরাজ উদ্দিন প্রমুখ।
সাক্ষাতের পর তিনি এক প্রেসব্রিফিং-এ কথা বলেন।
ড. রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসীবাদীরা দেশকে অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। পতিত স্বৈরাচারি আমলে অপরাধকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছে। ফলে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যা রাষ্ট্রচারের সাথে একাকার করে ফেলা হয়েছিলো। কিন্তু স্বৈরাচারের পতন হলেও তাদের সৃষ্ট জঞ্জাল আজো রয়ে গেছে। ফলে আমিনার মত নিষ্পাপ শিশুদের গুলীবিদ্ধ হতে হচ্ছে। যা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে। তাই দেশ ও জাতিকে এ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হলে দেশে মূল্যবোধের চর্চা ও নৈতিক শিক্ষার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তিনি অপরাধ ও সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, দেশে সুশাসন ও আইনের শাসনের অভাবেই দেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দেশে দুর্নীতি-দুঃশাসন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। নাগরিকের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের হলেও পতিত স্বৈরাচারি আমলে রাষ্ট্রই মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ফলে দেশে চাঁদাবাজী, দখলবাজী ও সন্ত্রাসী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের পর সে অবস্থার পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা এখনো সম্ভব হয়নি। ফলে দেশে এখনো পুরোপুরি শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই অবিলম্বে সকল শ্রেণির অপরাধীদের গ্রেফতার এবং রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার পূর্বক নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। সংস্কার ছাড়া কোন নির্বাচনই অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।