প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে খুলনা বিভাগের ১২শ’ ৯৯টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৯৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মেহেরুন নেছা জানান, আম্পানের আঘাতে খুলনা বিভাগের ৩৫২টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪০ হাজার টাকা থেকে দুই লাখের ওপরে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির গুরুত্ব বিবেচনা করে অগ্রাধিকার-ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানানো হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে খুলনায় ২৯টি, বাগেরহাটে ৭টি, সাতক্ষীরায় ১৪৬টি, যশোরে ৬১টি, ঝিনাইদহে ৩৮টি, কুষ্টিয়ায় ৭টি, নড়াইলে ১৩টি, চুয়াডাঙ্গায় ১১টি, মাগুরায় ৮টি ও মেহেরপুরে ১২টি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক নিভারানী পাঠক বলেন, ‘আম্পানের আঘাতে খুলনা বিভাগের সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৯৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জেলা থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৯৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে খুলনার ৬৪টি স্কুলে এক কোট ১৭ লাখ ৮ হাজার টাকা, বাগেরহাটের ১৫৭টি স্কুলে এক কোটি ৭২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, সাতক্ষীরার ২৪১টি স্কুলে দুই কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, যশোরের ৩১২টি স্কুলে চার কোটি ৮২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, চুয়াডাঙ্গায় ৬১টি স্কুলে ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ঝিনাইদহের ৫১টি স্কুলে এক লাখ ৮১ হাজার টাকা, কুষ্টিয়ায় ৬টি স্কুলে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মাগুরায় ২১টি স্কুলে ৩৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, নড়াইলের ৩টি স্কুলে ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং মেহেরপুরে ৩১টি স্কুলে ২ কোটি ৫০ লাখ ৯ হাজার টাকা ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম সিরাজুদ্যোহা বলেন, ‘আম্পানের আঘাতে খুলনার কয়রায় ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, খুলনা সদরে ২টি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, ডুমুরিয়ায় একটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তেরখাদায় একটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত, দাকোপে ৩টি অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ও ৪টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত, পাইকগাছায় ১৪টি অধিক ক্ষতিগ্রস্ত, বটিয়াঘাটায় একটি অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন বলেন, ‘খুলনা জেলার কয়রায় ১৫টি স্কুলে প্রায় ১৯ লাখ টাকা, তেরখাদার ২টি স্কুলে ৪ লাখ টাকা, ডুমুরিয়ার ৪টি স্কুলে সাড়ে ১২ লাখ টাকা, পাইকগাছার ৫টি স্কুলে ২৩ লাখ টাকা, রূপসার ২টি স্কুলে আড়াই লাখ টাকা, বটিয়াঘাটার ৭টি স্কুলে ১৮ লাখ টাকা, ফুলতলার ১২টি স্কুলে ২৯ লাখ টাকা, দাকোপের ৪টি স্কুলে সোয়া লাখ টাকা, দিঘলিয়ার ১২টি স্কুলে ১৩ লাখ টাকা এবং খুলনা সদরের ৩টি স্কুলে এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, খুলনা বিভাগে প্রাথমিকে ৮ হাজার ১৬৭টি ও মাধ্যমিক পর্যায়ে দুই হাজার ৬২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।