Dhaka , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
লক্ষীপুরে  বৃদ্ধা মহিলাকে জবাই করে হত্যা লক্ষ্মীপুর মাদরাসার টয়লেটে থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার,অটক -১ কমলনগরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন দুই দফা না মানলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি লক্ষ্মীপুর আদালতের কর্মচারীদের কমলনগরে খাল দখল করে দোকানঘর নির্মাণের প্রতিবাদে  মানববন্ধন  ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশায় কৃষক; কোটি কোটি টাকা লোকসান লক্ষ্মীপুরে ইউনিয়ন বিভক্তির দাবিতে ফুুঁসে উঠেছে জনগণ লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মে দিবসের বর্ণাঢ্য র‌্যালিও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কমলনগরে অপহরণকৃত স্কুলছাত্রীর লাইভ নিয়ে নানা প্রশ্ন  কমলনগরে অবৈধ ইটভাটা স্থাপনের দায়ে ৯ লাখ টাকা জরিমানা আদায়

লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অফিসার নির্বাচিত হলেন সদর মেডল থানার এএসআই ইলিয়াছ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
  • ৮৪ Time View

নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে স্বামী মো: মিলন হোসেনকে (৬০) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে (৫১) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালত। একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার (৩১ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো: রহিবুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত জাহানারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাদি তাদের ছেলে মোঃ সাফায়েত হোসেন ওরফে মাহবুব (২১)। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুড়িয়া গ্রামে তাদের বাড়ি।

মামলা ও আদালত সূত্র জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে সুপারী গাছের সাথে হাতবাঁধা অবস্থায় মিলনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরদিন মিলনের ছেলে সাফায়েত হোসেন বাদি হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত মিলনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে তিনি স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, স্বামী মিলনের সাথে তার ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবন চলমান ছিল। তাদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। বিয়ের পর থেকেই মিলন অস্বাভাবিক আচরণ করেতো। খিটখিটে স্বভাবের স্বামী মিলন বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। এছাড়া সংসারে মনযোগী না হয়ে নিজের মনমতো চলতো। এ নিয়ে তাদের সংসারে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। ঘটনার সময় রমজান মাস ছিল। রমজানের শেষ ১০ দিন স্ত্রী জাহানারা তার স্বামী মিলনকে মসজিদে ইতেফাকে বসতে বলে। এতে সে স্ত্রীকে গালমন্দ করে। ঘটনার রাতে জাহানারা বেগম তার স্বামীকে ঘরের পেছনের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে সুপারী গাছের সাথে গরু বাঁধার রশি দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। পরে একটি প্লাষ্টিকের রশি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ বাগানে ফেলে রাখে। পরদিন সকালে জাহানারা নিজেই পরিবারের সদস্যদেরকে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ জানায় ও দুর্বৃত্তরা তার স্বামীকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন।

পরে পুলিশের কাছে তার আচরণ সন্দেহজনক হলে জিজ্ঞাসবাদে পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। ২০২২ সালের ১৫ জুন জাহানারা বেগমকে স্বামী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ আদালেতে মামলার চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ঘটনার ১৩ মাসের মধ্যে জাহানারা বেগমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।

Tag :
About Author Information

Sagor Ahmed

লক্ষীপুরে  বৃদ্ধা মহিলাকে জবাই করে হত্যা

লক্ষ্মীপুরে শ্রেষ্ঠ অফিসার নির্বাচিত হলেন সদর মেডল থানার এএসআই ইলিয়াছ

Update Time : ০১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে স্বামী মো: মিলন হোসেনকে (৬০) শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে (৫১) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালত। একই সাথে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বুধবার (৩১ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো: রহিবুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত জাহানারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাদি তাদের ছেলে মোঃ সাফায়েত হোসেন ওরফে মাহবুব (২১)। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাগুড়িয়া গ্রামে তাদের বাড়ি।

মামলা ও আদালত সূত্র জানা যায়, ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল ভোরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে সুপারী গাছের সাথে হাতবাঁধা অবস্থায় মিলনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরদিন মিলনের ছেলে সাফায়েত হোসেন বাদি হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত মিলনের স্ত্রী জাহানারা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে তিনি স্বামীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, স্বামী মিলনের সাথে তার ৩৫ বছরের দাম্পত্য জীবন চলমান ছিল। তাদের তিন ছেলে এবং দুই মেয়ে। বিয়ের পর থেকেই মিলন অস্বাভাবিক আচরণ করেতো। খিটখিটে স্বভাবের স্বামী মিলন বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করতো। এছাড়া সংসারে মনযোগী না হয়ে নিজের মনমতো চলতো। এ নিয়ে তাদের সংসারে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। ঘটনার সময় রমজান মাস ছিল। রমজানের শেষ ১০ দিন স্ত্রী জাহানারা তার স্বামী মিলনকে মসজিদে ইতেফাকে বসতে বলে। এতে সে স্ত্রীকে গালমন্দ করে। ঘটনার রাতে জাহানারা বেগম তার স্বামীকে ঘরের পেছনের একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে সুপারী গাছের সাথে গরু বাঁধার রশি দিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। পরে একটি প্লাষ্টিকের রশি দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ বাগানে ফেলে রাখে। পরদিন সকালে জাহানারা নিজেই পরিবারের সদস্যদেরকে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ জানায় ও দুর্বৃত্তরা তার স্বামীকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন।

পরে পুলিশের কাছে তার আচরণ সন্দেহজনক হলে জিজ্ঞাসবাদে পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। ২০২২ সালের ১৫ জুন জাহানারা বেগমকে স্বামী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ আদালেতে মামলার চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ঘটনার ১৩ মাসের মধ্যে জাহানারা বেগমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।