Dhaka , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আনন্দ টিভির,বহিস্কৃত ডিএনই কর্তৃক এইচ,আর (এড‌মিন)কে হুম‌কি, থানায় জিডি লক্ষ্মীপুরে সাজাপ্রাপ্ত আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে বাদিনীকে হুমকি অর্থ ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে আনন্দ টিভি থেকে বরখাস্ত হলেন ‘প্রশান্ত’ গণঅভ্যুত্থান যখন হয় এটা আইন মেনে চলে না এটা আইন ভাঙার জন্য হয়:ফরহাদ মজহার লক্ষ্মীপুরে গুলীবিদ্ধ আমিনার শয্যাপাশে জামায়াত নেতা :ড.রেজাউল লক্ষ্মীপুরে বিএনপি দুই গ্রুপে সংঘর্ষে নিহত ১ শহিদদের রক্তের বদলা নিতে ‘যে অঙ্গীকার’ করলেন শিবির সভাপতি আ.লীগ নিষিদ্ধে সরকার একা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না : মাহফুজ আলম বাংলাদেশেকে নিয়ে একটা গভীর চক্রান্ত চলছে: এ্যানি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্রই আর টিকবে না : ফয়েজ আহম্মদ

রামগঞ্জে পরিত্যক্ত ট্যাংকিতে পড়ে দাদা নাতীসহ ৪জনের মৃত্যু

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৩০ Time View

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর): প্রতিনিধিলক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নুনিয়াপাড়া গ্রামে শনিবার (২৫ নভেম্বর) মাদার বাড়ীর (বক্তের বাড়ী) বাগানে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে দাদা সফি উল্যাহ (৬০) ও নাতি মো. ওমরের (৩) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকাহত পুরো এলাকাবাসী।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ৪ নম্বর ইছাপুর ইউনিয়নের নুনিয়াপাড়া গ্রামের মাদার বাড়ীর (বক্তের বাড়ী) বাগানে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন ও এলাকাবাসী জানান, আজ শনিবার সকালে দাদা সফিউল্যাহর সাথে হাঁটতে বের হয় নাতী মোঃ ওমর। দীর্ঘক্ষন পার হয়ে গেলে ঘরে না ফেরায় বাড়ীর লোকজন দাদা নাতীকে খুঁজতে বের হয়।

খুঁজতে গিয়ে দাদা মোঃ সফিউল্যাহ ও নাতী ওমরকে নুনিয়াপাড়া গ্রামের মাদার বাড়ীর বাগানের একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
সফিউল্যাহর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, দাদার সাথে প্রায়ই হাঁটতে বের হতো নাতী মোঃ ওমর। আজ সকালেও প্রতিদিনকার মতো হাঁটতে বের হওয়ার পর তাদের ফিরতে দেরি দেখে আমরা খুঁজতে বের হই। পরে বাড়ীর পাশের বাগানে পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকের পানিতে আমার স্বামী ও নাতির লাশ ভেসে থাকতে দেখি।
তিনি আরো জানান, আমার ছেলে বাবু গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে দীর্ঘদিন ব্যবসা করতো। সম্প্রতি গুলিস্তানের বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আমার ছেলে নিঃশ্ব হয়ে প্রবাসে ফাঁড়ি জমায়। আজ আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

এদিকে উপজেলার ৮নং করপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ডুমুরিয়া গ্রামের বেপারী বাড়ীতে দুপুর সাড়ে ১২টায় পুকুরের পানিতে ডুবে ওমর (২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শিশু ওমর ওই বাড়ির এস এম হামিদুল ইসলাম এর একমাত্র ছেলে।
বাড়ীর লোকজন জানান, ওমরের বাবা হামিদুল ব্যক্তিগত কাজে গাজীপুর বাজারে ছিলেন। হামিদুলের স্ত্রী রান্নাবান্না ও ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকার কোন এক সময়ে শিশু ওমর বাড়ীর পুকুরে পড়ে ডুবে যায়।

পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার লাশ পুকুরের পানিতে ভেসে উঠতে দেখে। খবর পেয়ে শিশু ওমরের বাবা বাড়িতে ছুটে আসেন। হামিদুল ও বাড়ীর লোকজন শিশু ওমরকে উদ্ধার করে পোদ্দার বাজারের ভাই ভাই হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে উপজেলার ৫নংচন্ডিপুর ইউনিয়নের ৪নং হরিশ্চর গ্রামে শনিবার(২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পানিতে ডুবে সাদিয়া আক্তার জাইফা নামের ২২ মাসের আরো এক শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে। শিশু জাইফা ওই গ্রামের দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন এর মেয়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন জানান, শিশুটির মা ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় সে বাইরে খেলছিল। কিছুক্ষণ পর সন্তানকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন মা। কোথাও না পেয়ে বাড়ির পুকুরে জাইফাকে ভাসতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জাইফার বাবা দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতিদিনের মতো ওর মা ঘরের কাজ করছে। আমি কাজের পাশাপাশি হরিচ্ছর আইডিয়াল স্কুলের দপ্তরির চাকরি করি। আজকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার এক ঘন্টা পর শুনি আমার মেয়ে জাইফা পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমি মেয়েকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, অসাবধানতা বসতঘরের সেপটিক ট্যাংকে পড়ে দাদা ও নাতির মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছ হস্তান্তর করা হয়েছে।

Tag :
About Author Information

Sagor Ahmed

আলোচিত

আনন্দ টিভির,বহিস্কৃত ডিএনই কর্তৃক এইচ,আর (এড‌মিন)কে হুম‌কি, থানায় জিডি

রামগঞ্জে পরিত্যক্ত ট্যাংকিতে পড়ে দাদা নাতীসহ ৪জনের মৃত্যু

Update Time : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর): প্রতিনিধিলক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নুনিয়াপাড়া গ্রামে শনিবার (২৫ নভেম্বর) মাদার বাড়ীর (বক্তের বাড়ী) বাগানে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে দাদা সফি উল্যাহ (৬০) ও নাতি মো. ওমরের (৩) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকাহত পুরো এলাকাবাসী।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ৪ নম্বর ইছাপুর ইউনিয়নের নুনিয়াপাড়া গ্রামের মাদার বাড়ীর (বক্তের বাড়ী) বাগানে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন ও এলাকাবাসী জানান, আজ শনিবার সকালে দাদা সফিউল্যাহর সাথে হাঁটতে বের হয় নাতী মোঃ ওমর। দীর্ঘক্ষন পার হয়ে গেলে ঘরে না ফেরায় বাড়ীর লোকজন দাদা নাতীকে খুঁজতে বের হয়।

খুঁজতে গিয়ে দাদা মোঃ সফিউল্যাহ ও নাতী ওমরকে নুনিয়াপাড়া গ্রামের মাদার বাড়ীর বাগানের একটি পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
সফিউল্যাহর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, দাদার সাথে প্রায়ই হাঁটতে বের হতো নাতী মোঃ ওমর। আজ সকালেও প্রতিদিনকার মতো হাঁটতে বের হওয়ার পর তাদের ফিরতে দেরি দেখে আমরা খুঁজতে বের হই। পরে বাড়ীর পাশের বাগানে পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংকের পানিতে আমার স্বামী ও নাতির লাশ ভেসে থাকতে দেখি।
তিনি আরো জানান, আমার ছেলে বাবু গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে দীর্ঘদিন ব্যবসা করতো। সম্প্রতি গুলিস্তানের বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আমার ছেলে নিঃশ্ব হয়ে প্রবাসে ফাঁড়ি জমায়। আজ আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

এদিকে উপজেলার ৮নং করপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ডুমুরিয়া গ্রামের বেপারী বাড়ীতে দুপুর সাড়ে ১২টায় পুকুরের পানিতে ডুবে ওমর (২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শিশু ওমর ওই বাড়ির এস এম হামিদুল ইসলাম এর একমাত্র ছেলে।
বাড়ীর লোকজন জানান, ওমরের বাবা হামিদুল ব্যক্তিগত কাজে গাজীপুর বাজারে ছিলেন। হামিদুলের স্ত্রী রান্নাবান্না ও ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকার কোন এক সময়ে শিশু ওমর বাড়ীর পুকুরে পড়ে ডুবে যায়।

পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার লাশ পুকুরের পানিতে ভেসে উঠতে দেখে। খবর পেয়ে শিশু ওমরের বাবা বাড়িতে ছুটে আসেন। হামিদুল ও বাড়ীর লোকজন শিশু ওমরকে উদ্ধার করে পোদ্দার বাজারের ভাই ভাই হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে উপজেলার ৫নংচন্ডিপুর ইউনিয়নের ৪নং হরিশ্চর গ্রামে শনিবার(২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পানিতে ডুবে সাদিয়া আক্তার জাইফা নামের ২২ মাসের আরো এক শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে। শিশু জাইফা ওই গ্রামের দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন এর মেয়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন জানান, শিশুটির মা ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় সে বাইরে খেলছিল। কিছুক্ষণ পর সন্তানকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন মা। কোথাও না পেয়ে বাড়ির পুকুরে জাইফাকে ভাসতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জাইফার বাবা দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতিদিনের মতো ওর মা ঘরের কাজ করছে। আমি কাজের পাশাপাশি হরিচ্ছর আইডিয়াল স্কুলের দপ্তরির চাকরি করি। আজকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার এক ঘন্টা পর শুনি আমার মেয়ে জাইফা পানিতে ডুবে মারা গেছে। আমি মেয়েকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, অসাবধানতা বসতঘরের সেপটিক ট্যাংকে পড়ে দাদা ও নাতির মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছ হস্তান্তর করা হয়েছে।